স্নিগ্ধ শুভ্র কাশফুল, আমি আর প্রিয় স্মৃতি
শরৎ এলেই অস্থির হয় এ মন
এক অদ্ভূত মায়ায়—
চলে যাই নদীতীরে কাশবনে
নদী ঘেষা কাশবন ৷
বাতাসে দোলায়মান কাশফুল গুলো
স্বাগত জানায় ৷
এখানে নেই ঘরে ফেরার তাড়া
নেই পিছুটান
এখন তো কেউ অপেক্ষা করে না ৷
আমি হেঁটে চলি একা
একান্ত সঙ্গী আমার কষ্টগুলো ৷
স্মৃতির ঝুলি থেকে হাতড়িয়ে বেড়াই
প্রিয় মুহূর্তটা ৷
স্নিগ্ধ শুভ্র কাশফুল, আমি আর প্রিয় স্মৃতি ৷
চোখের সামনে ধ্রুবতারার মতোই জ্বলজ্বলে…
এই তো সেইদিনের কথা…
এই কাশবনে চোখে চোখ রেখে
তুমি বলেছিলে—
“তুমি-আমি পাশাপাশি থাকবো অনন্তকাল
আমাদের এ পথচলা হাজার বছরের ৷”
এ কথা শোনার পর ভালোবাসার উষ্ণতায় আর
কাশফুল স্নিগ্ধ শুভ্রতায়
পবিত্র হয়েছিল মনটা ৷
নিজেকে মনে হয়েছিলো কাশবনের রাজা
আর তোমাকে কাশবনের রানী ৷
কানের ভেতর ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল
তোমার স্বপ্নের কথাগুলো ;
মনের অজান্তেই হেসেছিলাম সুখ হাসি ৷
সেইদিন সাক্ষী ছিলো এই কাশবন
সাক্ষী ছিলো নীলাকাশ
সাক্ষী ছিলো দক্ষিণা মৃদুমন্দ বাতাস ৷
এরা সবাই এখনো আছে
কালের সাক্ষী হয়েই ৷
অথচ নীলাকাশে সাদা মেঘের ভেলায়
দু’জনে মিলে দেখতাম রবীন্দ্রনাথকে আবার
মেঘগুলো দিয়েই আঁকতাম তোমার অবয়ব ৷
এখন পেজা তুলোর মতো সাদা মেঘগুলো
জমাট হয়ে কোন ছবি আঁকে না,
উড়ে যায় দূর থেকে দূরে ৷
বিবর্ণ স্মৃতির প্রান্তরে হেরে যাওয়া সময়ে
তুমি নেই, তুমি নেই…
কালের পরিক্রমায়
শরৎ আসে শরৎ যায়
কেবল তুমি আসো না ৷
এ মন প্রতীক্ষায় থাকে তুমি আসবে
দুইজনে ঘুরবো কাশবনে হাতে রেখে হাত ৷
হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হলে,
মাথা রাখবো তোমার কোলে
জীবনানন্দের কবিতা বলবো
আর তুমি অবাক বিস্ময়ে
আমার চোখে চোখ রেখে মিষ্টি হাসবে !
প্রতীক্ষায় আমার নেই কোন অবহেলা
তোমার জন্যই—
সারাটা জীবন না হয় করলাম প্রতীক্ষা ৷
এ প্রতীক্ষায় আমার ভালোলাগা
আমার সমস্ত নীলকষ্টের মাঝেও
অন্যরকম সুখানুভূতি
অনিন্দ্য সুন্দর ভালোবাসা ৷


