হ্যামলেট
ফিসফাস মিলিয়ে গেছে। আমি এসে মঞ্চে দাঁড়িয়েছি
দরজার ফ্রেমের গায় ভর দিয়ে কান পেতে শুনি
দূরাগত প্রতিধ্বনির ভিতরে কোন বাণী,
কোন উপাদান, গল্প আগুয়ান আমার জীবনে।
রাত্রির গ্রহণ-আলো এখন আমার মুখে স্থির
সহস্র অপেরা-গ্লাস এদিকে ফেরানো
যদি বা সম্ভব হয়, তবে আব্বা, পিতা,
এ পেয়ালা আমার সম্মুখ থেকে নিয়ে যাও তুমি।
আমার পছন্দ হয় তোমার এ কঠিন রচনা
এই ভূমিকায় আমি অভিনয়ে যথেষ্ট সহজ
কিন্তু দেখো, এসময় অন্য নাটকের মধ্য পথ—
এখন আমার সেই রূপান্তরে মুক্তি পেতে চাই।
যদিও প্রতিটি দৃশ্য সুচিন্তিত, পূর্ব নির্ধারিত
যেখানে শেষের অঙ্ক, সেখানেই অবিচল শেষ।
আমি এক, সব কিছু ড়ুবে যায় কপট বিশ্বাসে
মাঠের উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া—এক জীবন শেষ করা নয়।
অনুবাদ : নচিকেতা ভরদ্বাজ
বরিস পাস্তেরনাকের জন্ম ১৮৯০, পিতা ছিলেন খ্যাতিমান চিত্রকর ৷ কবির প্রথম কবিতার বই বেরোয় ১৯১৪ সালে, কোনও সাহিত্য আন্দোলনের সঙ্গে নিজেকে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত করেননি, প্রায় ১৯৩৪ সাল থেকেই ১৯৫৩-তে স্টালিনের মৃত্যু পর্যন্ত, যখন সরকারের পক্ষ থেকে সোভিয়েট রাশিয়ার লোকদের প্রতি নানান অনুশাসন জারি হতে থাকে, তিনি কবিতা লেখা বা প্রকাশ বন্ধ রেখেছিলেন, এই সময় বিদেশি সাহিত্যের বিশেষত শেকসপিয়ার অনুবাদ করেছেন। তাঁর উপন্যাস ড. জিভাগো রাশিয়ায় নিষিদ্ধ হলেও গোপনে ইতালিতে ছাপা হয় ১৯৫৭ সালে, পরে ইংরেজিতে। ১৯৫৮-তে তার নামে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা ও প্রত্যাখ্যান, ১৯৬০-এ ভগ্নহৃদয় মৃত্যু। তাঁর রচনা রাশিয়ায় অন্যায় ভাবে নিষিদ্ধ করা এবং রাশিয়াকে সমালোচনা করার জন্য পশ্চিমি সভ্যতা তার রচনাকে যেরকম অস্ত্রের মতন ব্যবহার করেছে—এই দুই বিষয়েই তিনি দুঃখ পেয়েছিলেন।


