নাট্যকলা (ইংরেজি: Theatre বা Theater) দর্শকের সম্মুখে স্থাপিত মঞ্চে বা পটে অভিনীত নাটক। এটি শিল্পমাধ্যমের (পারফর্মিং আর্ট) একটি শাখা। দর্শক বা শ্রোতার জন্য যেকোনো পরিবেশনাকে (পারফর্মেন্সকে) নাট্যকলা হিসেবে বিবেচনা করা গেলেও পারফর্মিং আর্ট হিসেবে নাট্যকলা বিশেষভাবে জোর দেয় সরাসরি অংশগ্রহণকারীদের দ্বারা সৃষ্ট একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ নাটকের ওপর। একটি পরিবেশনাকে নাট্যধর্মী বা নাটকীয় বলা যেতে পারে যদি তা একটি বাস্তবানুগ মায়া বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। এই দুইটি বিস্তারিত সংজ্ঞা অনুযায়ী বলা যায় যে নাট্যকলার অস্তিত্ব ছিল মানবসভ্যতার প্রত্যূষকালেও, কারণ গল্প বলার একটি স্বাভাবিক প্রকৃতিগত প্রবণতা প্রতিটি মানুষে বিদ্যমান। সূচনাকাল থেকেই নাট্যকলা অনেকরকম রূপ বা প্রকার ধারণ করেছে; প্রয়োগ করেছে অনেক রকম কথা, দেহভঙ্গি, গান, নাচ, দৃশ্য বা ঘটনা। দৃশ্যগ্রাহ্য কলাসহ (চিত্রাঙ্কণ, ভাষ্কর্য ইত্যাদি) অন্যান্য পারফর্মিং আর্টগুলোকে নাট্যকলা একত্রিত করেছে একটিমাত্র সমন্বিত শিল্পের প্রকারে।
২৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে মিশরে একটি ধর্মীয় নাটক অনুষ্ঠিত হয়। নাটকটির কাহিনী নেয়া হয়েছিল বিখ্যাত মিশরীয় মিথলজি “মিথ অভ ওসিরিস অ্যান্ড আইসিস” থেকে। আর এটাই ছিলো নাট্য-সম্পর্কিত প্রথম কোনো ঘটনা যার তথ্য নথিপত্রে পাওয়া যায়। সেসময় প্রতি বছর প্রতিটি জনপদে বিভিন্ন উৎসবে পরিবেশিত হতো গড ওসিরিসের এই গল্প, ফলস্বরূপ নাট্যকলা আর ধর্মের মাঝে দীর্ঘ এক সম্পর্কের সূচনা হয়।
প্রাচীন গ্রিকরা নাট্যকলাকে একটি নির্দিষ্ট আনুষ্ঠানিক রূপ দিতে শুরু করে। তারা ট্র্যাজেডি, কমেডিসহ মঞ্চনাটকের অন্যান্য রূপগুলোর, যেমন স্যাটায়ার এর, সুস্পষ্ট ও যথাযথ সংজ্ঞা গঠন করে। গ্রিকদের কাছ থেকেই প্রথম নাটকের সমালোচনার ধারণা পাওয়া যায়।এমনকি পেশা হিসেবে অভিনয়কে বেছে নেয়ার ধারণাও গ্রিকদের থেকেই পাওয়া গিয়েছে ৷ তারা মঞ্চনাটক নির্মাণের কৌশলেরও উন্নতি সাধন করে। আধুনিক দুনিয়ায় সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এগুলোকেই অভিযোজিত করা হয়েছে, ব্যাখ্যা করা হয়েছে হাজারো রকমের পন্থায়। উদাহরণস্বরূপ অ্যান্টিগোনে নাটকটির কথা বলা যেতে পারে, ১৯৪৪ সালে ফরাসি নাট্যকার জাঁ আনউই একে ব্যবহার করেছিলেন নাজি বাহিনীর ফ্রান্স দখল নিয়ে বক্তব্য প্রকাশের জন্য, আবার ১৯৪৮ সালে এই নাটকটিই ব্যবহার করেছিলেন জার্মান নাট্যকার ব্রেশ্ট, যেখানে তিনি সাদৃশ্য দেখিয়েছিলেন মিশরের প্রাচীন নগরী থিবির শাসক ক্রেওনের সাথে হিটলারের আর থিবির সাথে সাদৃশ্য দেখিয়েছিলেন পরাজিত জার্মানির। গ্রিক মঞ্চনাটকে ব্যবহৃত মুখোশ ব্যাপকভাবে পরিগৃহীত হয় প্রথম ও দ্বিতীয় শতকের রোমে। শোভাবর্ধক হিসেবে এই মুখোশের ব্যবহার শুরু হয় রোমানদের বাসভবনে ও সরকারি স্থানগুলিতে । প্রাচীন গ্রিকরা নাট্যকলাকে একটি নির্দিষ্ট আনুষ্ঠানিক রূপ দিতে শুরু করে। তারা ট্র্যাজেডি, কমেডিসহ মঞ্চনাটকের অন্যান্য রূপগুলোর, যেমন স্যাটায়ার এর, সুস্পষ্ট ও যথাযথ সংজ্ঞা গঠন করে। গ্রিকদের কাছ থেকেই প্রথম নাটকের সমালোচনার ধারণা পাওয়া যায়।এমনকি পেশা হিসেবে অভিনয়কে বেছে নেয়ার ধারণাও গ্রিকদের থেকেই পাওয়া গিয়েছে।। তারা মঞ্চনাটক নির্মাণের কৌশলেরও উন্নতি সাধন করে। আধুনিক দুনিয়ায় সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এগুলোকেই অভিযোজিত করা হয়েছে, ব্যাখ্যা করা হয়েছে হাজারো রকমের পন্থায়। উদাহরণস্বরূপ অ্যান্টিগোনে নাটকটির কথা বলা যেতে পারে, ১৯৪৪ সালে ফরাসি নাট্যকার জাঁ আনউই একে ব্যবহার করেছিলেন নাজি বাহিনীর ফ্রান্স দখল নিয়ে বক্তব্য প্রকাশের জন্য, আবার ১৯৪৮ সালে এই নাটকটিই ব্যবহার করেছিলেন জার্মান নাট্যকার ব্রেশ্ট, যেখানে তিনি সাদৃশ্য দেখিয়েছিলেন মিশরের প্রাচীন নগরী থিবির শাসক ক্রেওনের সাথে হিটলারের আর থিবির সাথে সাদৃশ্য দেখিয়েছিলেন পরাজিত জার্মানির। গ্রিক মঞ্চনাটকে ব্যবহৃত মুখোশ ব্যাপকভাবে পরিগৃহীত হয় প্রথম ও দ্বিতীয় শতকের রোমে। শোভাবর্ধক হিসেবে এই মুখোশের ব্যবহার শুরু হয় রোমানদের বাসভবনে ও সরকারি স্থানগুলিতে । রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে মধ্যযুগীয় ইংল্যান্ডে পশ্চিমা নাট্যকলা বিকাশ লাভ করে। এরপর স্পেনে, ইতালিতে, ফ্রান্সে এবং রাশিয়ায় পর্যায়ক্রমিকভাবে অনেকরকম রূপ ধারণ করে নাট্যকলা সমৃদ্ধি লাভ করে ষোল, সতের এবং আঠারো শতকে। এই শতকগুলিতে নাট্যকলার বিকাশ প্রক্রিয়ার একটি সাধারণ প্রবণতা ছিল রেনেসাঁ এবং গ্রিকদের কাব্যধর্মী নাটক থেকে সরে গিয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি বাস্তবধর্মী শৈলী, বিশেষ করে শিল্প-বিল্পবকে অনুসরণ করা।আমেরিকার (দ্য নিউ ওয়ার্ল্ড বা পনের শতকের পশ্চিম গোলার্ধ) উপনিবেশায়নের সাথে সাথে একটি উত্তর আমেরিকান মঞ্চনাটকও প্রকাশিত হয়।
পূর্বদেশীয় (প্রাচ্য) নাট্যকলার ইতিহাস ও আদি উৎসের সন্ধান পেতে চাইলে ফিরে তাকাতে হবে ১০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃত নাট্যকলায়। চীনা নাট্যকলাও একই সময় থেকে বিদ্যমান। জাপানি নাট্যকলা কাবুকি, নোহ এবং কিয়োহজেন রয়েছে সতেরশ খ্রিষ্টাব্দ থেকে। চীন, কোরিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া জুড়ে সম্প্রসারিত হয়েছে পূর্বদেশীয় অন্যান্য নাট্যকলা।
ইসলামের মধ্যযুগে (সপ্তম খ্রিষ্টাব্দের মধ্যভাগ থেকে তের খ্রিষ্টাব্দের মধ্যভাগ) সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ছিলো পাপেট নাট্যকলা (এর মধ্যে ছিলো হ্যান্ড পাপেট, শ্যাডো প্লে বা শ্যাডো পাপেট্রি এবং ম্যারিওনেট প্রোডাকশন থেকে পাপেট পরিবেশনা ) এবং তাজিয়া নামে এক ধরনের আবেগঘন নাটক (প্যাশন প্লে)। তাজিয়ার অভিনেতারা ইসলামের ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ের ঘটনাবলীকে যেন পুনরুজ্জীবিত করে তুলতেন তাদের অভিনয়ের মাধ্যমে। বিশেষতঃ, ইসলামের শিয়া সম্প্রদায়ের নাটক বা পরিবেশনাসমূহ আবর্তিত হয়েছে খলিফা (নেতা বা রাষ্ট্রপ্রধান) আলী’র পুত্র হাসান ইবনে আলী এবং হুসাইন ইবনে আলীকে ঘিরে। (চলমান)
(উইকিপিডিয়া অবলম্বনে)


