মঙ্গলবার, নভেম্বর ৪, ২০২৫

বাংলাদেশের প্রথম বিজ্ঞানীর নাম ও আবিস্কার

স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু পদার্থবিজ্ঞান, উদ্ভিদবিদ্যাসহ বিজ্ঞানের নানা শাখায় কাজ করেছিলেন। এই উপমহাদেশে তিনিই পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানচর্চা (এক্সপেরিমেন্টাল সায়েন্স) শুরু করেছিলেন। তিনি প্রথম বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানের বই লিখেছেন। রহস্যময় এই বিজ্ঞানীর কাজের দুই-তৃতীয়াংশের আজও কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

article

স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু পদার্থবিজ্ঞান, উদ্ভিদবিদ্যাসহ বিজ্ঞানের নানা শাখায় কাজ করেছিলেন। এই উপমহাদেশে তিনিই পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানচর্চা (এক্সপেরিমেন্টাল সায়েন্স) শুরু করেছিলেন। তিনি প্রথম বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানের বই লিখেছেন। রহস্যময় এই বিজ্ঞানীর কাজের দুই-তৃতীয়াংশের আজও কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

আধুনিক বিজ্ঞান প্রচলনের পথিকৃৎ ছিলেন বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু। তাঁর কারণেই এ অঞ্চলে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা প্রয়াস পেয়েছে। আধুনিক চিন্তাধারার এই বিজ্ঞানীর চিন্তায় দার্শনিক পটভূমিও ছিল। আমরা তাঁর কাছে ঋণী।’

‘জগদীশ চন্দ্র বসু আমাদের আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। বিজ্ঞানী মার্কনি রেডিও আবিষ্কারের আগেই বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু বিনা তারে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে তথ্য-সংকেত বিনিময়ে সক্ষম হয়েছিলেন এবং প্রদর্শনও করেছিলেন। পদার্থবিজ্ঞানসহ বিজ্ঞানের নানা শাখায় তিনি বিভিন্ন সমস্যা সামধানের চেষ্টা করেছিলেন। বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রে তাঁর বিচরণ ছিল, বিশেষ করে জীব পদার্থবিদ্যা, জীববিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান ও পুরাতত্ত্ব—এগুলো নিয়েও তাঁর কাজ আছে। এত কাজ তিনি কীভাবে করলেন তা নিয়েও কৌতূহল আছে।’
জগদীশ চন্দ্র বসুর জন্ম ১৮৫৮ সালের ৩০ নভেম্বর ময়মনসিংহে। তিনি একজন বাঙালি পদার্থবিদ, উদ্ভিদবিদ ও জীববিজ্ঞানী এবং প্রথম দিকের একজন কল্পবিজ্ঞান রচয়িতা। তাঁর গবেষণা উদ্ভিদবিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে তোলে এবং ভারতীয় উপমহাদেশে তিনি ব্যবহারিক ও গবেষণাধর্মী বিজ্ঞানের সূচনা করেন। এই বিজ্ঞানী ১৯৩৭ সালের ২৩ নভেম্বর মারা যান।

এছাড়াও জগদীশ চন্দ্রের বাইরের পরিচয় হলো তিনি একজন জাতীয়তাবাদী, ভাষা ও দেশপ্রেমী, মরমি সাধক ও গবেষক। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁর বৈজ্ঞানিক কাজগুলোর আজও ব্যাখ্যা বের করা যায়নি। জগদীশ চন্দ্র বলেছিলেন, জীব ও জড়ের (উদ্ভিদের) মধ্যে সাযুজ্য বা মিল আছে।

বিজ্ঞানী বললেই চোখে-মনে ভেসে ওঠে জগদীশ চন্দ্রের কথা। তিন বছরে ১৩টি বিশ্বমানের বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রবন্ধ লিখেছিলেন জগদীশ চন্দ্র। তবে তাঁর কাজের দুই-তৃতীয়াংশই এখন পর্যন্ত ব্যাখ্যা করা যায়নি। তিনি এক রহস্যময় বিজ্ঞানী। তিনি সব সময় জীব ও জড়ের মধ্যে ঐক্যের সন্ধান খুঁজতেন। তিনি বলেছিলেন, মানুষ যেভাবে সাড়া দেয়ে, গাছও একইভাবে সাড়া দেয়। সে সময় উদ্ভিদকে জড় হিসেবেই দেখা হতো। বিজ্ঞানের ও জ্ঞানকাণ্ডের বিভিন্ন শাখায় জগদীশ কাজ করেছিলেন শুধু সত্য জানার উদ্দেশ্যে।

বড় বিজ্ঞানীরা যেখানে ৬০ মিলিমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের রেডিওয়েভ নিয়ে কাজ করতে পারছিলেন না, সেখানে জগদীশ চন্দ্রই প্রথম পাঁচ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের রেডিও তরঙ্গে সংকেত বিনিময় আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি দুই শ বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি আবিষ্কার করেছিলেন। ভারতবর্ষে পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানচর্চা (এক্সপেরিমেন্টাল সায়েন্স) তাঁর হাত ধরেই আসে।
জগদীশ বসু রাতের অন্ধকারে ছবি তোলার উপযোগী ক্যামেরাও বানিয়েছিলেন। সাহিত্যের সঙ্গে তাঁর প্রবল অনুরাগ ছিল। আজকের তরুণ প্রজন্মের জন্য তিনি অনুকরণীয় ও স্মরণীয়।

লেখক পরিচিতি

আরও লেখা

spot_img

সাম্প্রতিক লেখা