বুধবার, নভেম্বর ৫, ২০২৫

মিঠুন দাসের প্রবন্ধ

জয়ের মহানায়ক

পৃথিবীতে যুগ যুগ ধরে সময়ের বিবর্তনে আপামর জনতা যারা সত্যের সন্ধানে রক্তিম পথের ডাক দিয়েছেন সাধারণ জনগণ, নিরীহ, নিপীড়িত জনগণ ও গণ মানুষ করেছেন মহান সংগ্রাম। তাদের এই মহান আত্ম ত্যাগের জন্য রয়েছে গভীর উদ্বেগ। তাদের আত্ন ত্যাগের স্মৃতিকে নিজের হৃদয় সতত নীড়ে স্নান করে, পরম আদরে ও গর্বে।

পৃথিবীর যে কোন দিক ভ্রষ্ট, পথহারা দেশ জাতির সম্বৃদ্ধির পথ অবলোকন করতে হলে তার পিছনে থাকে ইতিহাসের সফল নায়ক আর তরুন প্রাণের এক উদ্বেলিত আত্ম জিজ্ঞাসা। কোন দেশ জাতির উত্তরাধিকারী কখনো কি দায় স্বীকার করে যে, তার মা কে কোন দুর্বৃত্তরা ভাগ করে নিয়ে যাক। এটা কখনো কোন সন্তান চায়নি বা কখনো চাইবেও না বা হতেও পারে না।

১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করে আমাদের ভাষা জন্য যুদ্ধ করা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, বুদ্ধিজীবী সহ সকল বলিয়ান জাতির পরিচয় দান করা এবং আমাদের এই মহান ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হয়ে আজকের পথচলা।

আমাদের জাতি সমাজ ব্যবস্থার রন্ধ্রে রন্ধ্রে নিষ্পেষিত, শোষিত আর লাঞ্চিত। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোন জাতি আছে যারা আমাদের মতন, বীরত্বগাঁথা, বিজয়গাঁথা আর শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার। এমন কোন জাতি আছে যারা তাদের জাতীয়তা বোধের পরিচ দিয়েছে একাগ্রচিত্তে আর জলাঞ্জলি দিয়েছে নিজের জীবনকে ২৪ বছরে পশ্চিম পাকিস্তান তাদের নীল নকশা কে আরো সুদৃঢ় করার মানসে যখন ২৫শে মার্চ কালো রাতে নীল নকশা আকারে ধ্বংসাত্মক আর রক্তপিপাসু হয়ে উঠেন পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি সেটা বুঝতে বাকি রইলো না পূর্ব পাকিস্তানের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের।

৬ই মার্চ ইয়াহিয়া ঘোষণা করেন। ২৫শে মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে বসবেন। ঐ দিন লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানকে পূর্ব বাংলার নতুন গভর্নর নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু ঢাকা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি তাঁর শপথ গ্রহণ পরিচালনায় অস্বীকৃতি জানান। গভর্নর পদ শূন্য থাকে। ৭ই মার্চ শেখ মুজিবের ঐতিহাসিক ভাষণ। তিনি রেসকোর্স ময়দানে বাংলার জনগণকে স্বাধীনতার সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হতে উদাত্ত আহবান জানান। তাঁর ভাষণে তিনি বলেন। ” এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম”। ১৫ই মার্চ তারিখে শেখ মুজিব বাংলাদেশের অসামরিক প্রশাসন চালু করার জন্য ৩৫টি বিধি জারি করেন। ঐ দিন ইয়াহিয়া খান ঢাকায় আসেন। তারপর ১০ দিন আলোচনার নামে চলে সময়ের অবক্ষয় ও প্রহসন। ভুট্টো এই ষড়যন্ত্রের শরিক হন। বলাবাহুল্য, এ সময়ে সামরিক বাহিনী সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছিলো।

২৫শে মার্চ রাতে ইয়াহিয়া গোপনে ঢাকা ত্যাগ করেন এবং মধ্য রাতে থেকে শুরু হয় ইতিহাসের সর্বাত্মক নির্মম গণহত্যা অভিযান। এই হত্যাভিযানের প্রধান শিকার হয় ছাত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলী ও বুদ্ধিজীবী শ্রেণী। অতঃপর ২৫শে মার্চ থেকে পরবর্তী নয় মাস স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রত্যক্ষ সংগ্রাম। সেই সংগ্রামের ইতিহাস স্বাধীনতার স্বপক্ষে চরম ত্যাগ ও তিতিক্ষার এক গৌরবদীপ্ত কাহিনী।

তথ্যসূত্র : বাংলাদেশের ইতিহাস

লেখক পরিচিতি

মিঠুন চন্দ্র দাস
মিঠুন চন্দ্র দাস
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার কালীগঙ্গা নদীর তীরে সিংজুরী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা: জ্ঞানেন্দ্র চন্দ্র দাস, মাতা: বীণা রানী দাস। শিক্ষাগত যোগ্যতা এম.এ ৷ তিনি গল্প, ছড়া, কবিতা লিখেন ৷ বিভিন্ন সাময়িকীতে এবং বিভিন্ন যৌথ কাব্য গ্রন্থে তার লিখা প্রকাশিত হয়েছে

আরও লেখা

spot_img

সাম্প্রতিক লেখা